হারিয়ে যাওয়া শৈশব, হারিয়ে যাওয়া গল্পঃ। নাকিব মুহাম্মাদ


হারিয়ে যাওয়া শৈশব, হারিয়ে যাওয়া গল্পঃ। নাকিব মুহাম্মাদ
শৈশব


সারা দিনের অনেক ব্যস্ততা পিছে ফেলে আবারও আগের দিনের ন্যায় দিনলিপি লিখতে খাতা খুলে বসলাম। ভাবতে ভাবতে মনে হলো শৈশবে কথা। ছোটবেলার স্মৃতিচারণ। ছোটবেলায় আমি একটু বেশীই চঞ্চল ছিলাম সারাদিন এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়িয়েই চলে যেতো। গাছের আম বা আমড়া চুরির মতো ঘটনা যেনো ছোটবেলায় নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার-সেপার। ওই গাছে ঢিল মারা অমুক গাছে ঝুলে আমরাঙ্গা ছিঁড়ে আনা। হিজিবিজি জীবন। আমার শৈশব টাই মনে হয় আমার জীবনের বড়ো অংশ আর এখন যে অংশে আছি সেটা তুচ্ছ মনে হয় শিশবের কাছে।

-আই মিস মাই শৈশব😘😘। 

একবার মা শলা দিয়ে মেরেছিল মনে আছে। খুব অভিমান হয়েছিল। ভেবেছিলাম এখানে বোধয় আমি থাকবোনা এই আমি চললাম। আর ফিরবো না। এরকম এক দুই করে করে অসংখ্য ঘটনায় "ছোটবেলা" নামের সত্তা আনন্দের মলাটে বাঁধা। শান্তি আর সুখের উল্লাসে কাটানো বেলাগুলো মনেই হতো না সেই দিন গুলার মাঝে। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে সেই দুরন্তপনা দিনগুলোর কথা। মনে আছে আমাদের মসজিদে আগে কলার পাতায় খিচুড়ি খাওয়ানো হতো। মসজিদে লাইন ধরে তাকিয়ে থেকে বসে থাকতাম কলার পাতায় খিচুড়ি খাওয়ার জন্য আবার কখনো জলাবাতি খেলতাম পিকনিক করতাম অস্বাধারণ জগৎ।

আজ সেই সময় গুলো ভাববার সময় নেই। খাতার পাতায় লিখারও টাইম নাই। হারাতে বসেছি সেই ধুলোমাখা দিন গুলো টায়ার দৌড় থেকে নিয়ে সুপারিপাতার গাড়ি ইত্যাদি এসব আজকাল সপ্ত আশ্চর্যের অংশ। শহর মুখি খাচা বন্ধি মানুষগুলো এর কিছুই পায়নি। শহরের মত তখনকার সময়ে মোবাইল ছিল না যারা কিনতো দুয়েকজনে- নোকিয়া এগারশো মডেলের ফোন তাদেরও অনেক মূল্য বেড়ে যেত ওইসময়। 

শৈশবে গ্রাম বাংলায় বড়ো হওয়ায় কত সারল্য আর আনন্দে কেটেছে দিনগুলো রাত হলে ফুফু এসে গল্পঃ শুনিয়ে হাত পাখা বাওয়িয়ে ঘুম পাড়াতেন। বিদ্যুৎ নামে কিছু আছে বলে জানা ছিল না শৈশবে। তাই ওইসব অনেক দূরের বিষয়। হারিকেন দিয়ে রাত চলতো কিন্তু আজ সেই হারিকেন নেই। হয়তো কারো ঘরে আছে কিন্তু জং ধরা। সেই স্মৃতিগুলো আর ফিরবে না আজকাল গ্রামে আর আগের মত সোনালী ও বর্ণিল সাজের দিন দেখতে পাইনা। 

ভাবতাম কবে শহরে যাবো, ঢাকা যাবো ঘুরে দেখবো ঢাকার আশপাশ। যখন আসলাম ঘুরে দেখি এই ইট পাটকেলের গ্রহে এলিয়েন জগতের মানুষ বিচরণ করে। তাদের কাছে আমাদের শৈশব কোনো আবেগের মুহূর্ত বা কোনো ভাবারও বিষয় না।

দিনলিপিটা কয়েক বছর আগের -

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url