স্মরণ রাখুন কর্মের লক্ষ্য, জীবনের উদ্দেশ্য

মানব জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
জীবনের উদ্দেশ্য



কেয়ামতের দিন আপনি একা একা আল্লাহ সামনে দণ্ডায়মান হবেন কিছু যোগ্যতা নিয়ে আপনাকে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে। পৃথিবীতে থাকা অবস্থায় আপনাকে সে যোগ্যতা গুলো অর্জন করতে হবে। আপনার এই "জীবনের উদ্দেশ্য" সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি আপনার "জীবনের উদ্দেশ্য" নিয়ে ভেবেছেন কি কখনো? কি যোগ্যতা অর্জন করতে হবে তা আল কোরআন আপনাকে শিখাবে। 

কি কি গুণ অর্জন করতে হবে।

ধৈর্যশীল হতে হবে, সৎ হতে হবে, নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে, দয়ালু হতে হবে, মানুষকে সাহায্য করতে হবে, রবের এবাদত করতে হবে, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে, বিনয়ী হতে হবে...


পৃথিবীতে থাকা অবস্থায় আপনাকে এসব যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আপনার মাঝে এসব যোগ্যতা এখন হয়তো নেই, কিন্তু এগুলো আপনার মাঝে তৈরি করতে হবে, ক্রমান্বয়ে উন্নত করে যেতে হবে। মৃত্যু পর্যন্ত আপনাকে কাজ করে যেতে হবে। এ কিতাব আপনাকে এটাই শিখাবে কিভাবে ভালো মানুষ হতে হয়। এবং আপনার "জীবনের উদ্দেশ্য" কি হবে সেটাও শেখাবে। 

যখন আপনি জন্মগ্রহণ করেন তখন আপনি ভালো বা খারাপ কোনটাই নন। কিন্তু আপনাকে ভালো হওয়ার সামর্থ দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। যখন মারা যাবেন তখন আপনাকে অবশ্যই ভালো মানুষ হয়ে মৃত্যুবরণ করতে হবে। খারাপ মানুষের হয়ে মারা যান তখন কিছুই আপনাকে সাহায্য করবে না। আপনি খারাপ মানুষ তখন এটাই হবে আপনার পরিচয়। সুতরাং আপনি আপনার "জীবনের উদ্দেশ্য" নষ্ট করেছেন।

কোন জিনিষ আপনার পরিচয় বহন করে।

আর যদি ভালো মানুষ হিসেবে মারা যান তখন আপনি ভালো মানুষ এটাই হবে আপনার পরিচয়।
আপনার ভালো চরিত্র, ভালো আচার ব্যবহার, এবং ভালো যোগ্যতা সমূহ আপনাকে সাহায্য করবে। "জীবনের উদ্দেশ্য" সার্থক হবে। আপনার আশ-পাশে যেসব বস্তু রয়েছে সেগুলো আপনার বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন। কিন্তু সেগুলো আপনাকে সংজ্ঞায়িত করে না আপনার পরিচয় বহন করে না। আপনার পরিচয় বহন করে আপনার কর্ম। টাকা আপনাকে সংজ্ঞায়িত করে না, আপনার বাড়ি আপনাকে সংজ্ঞায়িত করে না, আপনার খাবার-দাবার আপনাকে সংজ্ঞায়িত করে না, আপনার বংশ পরিচয় আপনাকে সংজ্ঞায়িত করে না, আপনাকে সংজ্ঞায়িত করে যে জিনিস সেটা হল আপনার কর্ম। 

আমাদের "জীবনের উদ্দেশ্য" কি কেন বেঁচে আছি।

আমরা খাই এবং পান করি বেঁচে থাকার জন্য কিন্তু এটা আমাদের "জীবনের উদ্দেশ্য" নয়। তবে কোন উদ্দেশ্যে আমাদের এই বেঁচে থাকা? আমাদের বেঁচে থাকার তো একটা উদ্দেশ্য থাকা উচিত। 
আল কোরআন আপনাকে সেই উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিক্ষা দিবে। ভালো মানুষের যোগ্যতার সমূহ অর্জন করার জন্যই আমরা পৃথিবীতে বেঁচে আছি। 

ভালো মানুষ হওয়ার জন্য আপনাকে কি করতে হবে।

এখন ভালো মানুষ হওয়ার জন্য আপনাকে অনেক পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষা দেয়া ছাড়া আপনি কখনোই ভালো মানুষ হতে পারবেন না। "জীবনের উদ্দেশ্য" জানতে পারবেন।

অর্থাৎ আপনার জীবনে কঠিন সময় আসবেই। কারন, ওই কঠিন সময় গুলো ছাড়া আপনার ভালো চরিত্রের কথা কখনোই জানা যাবে না। আপনাকে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়েই যেতে হবে তবেই আপনি ধৈর্যশীল হতে পারবেন। 

পরীক্ষার ধরন কেমন হতে পারে।

আপনার আশপাশের মানুষ আপনার কাছে টাকা চাইবে কারণ আল্লাহ দেখবেন আপনি দয়ালু কিনা। আপনার দয়াশীলতা পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। শুধু পরীক্ষা নয় বরং এর দ্বারা আপনি দিন দিন দানশীল হয়ে উঠবেন। ক্রমান্বয়ে দানশীলতার বিকাশ ঘটবে। মানুষ আপনার কাছে টাকার জন্য খাবারের জন্য আসবে আর এটা সব সময় ঘটবে।

তখন এমন অনেক মানুষ থাকবে যারা আপনার এই পরিবর্তন পছন্দ করবে না। তারা চাইবে আপনি যেন তাদের মতো ভ্রষ্টতার জিন্দেগী যাপন করেন। আপনি কি করবেন আপনি কি তাদেরকে শেষ করে দিবেন? না! কোরআন কখনো শিক্ষা দেয় না। এটা আপনার ও তাদের জন্য একটি পরীক্ষা। 

কখনো কখনো তারা আপনাকে শুধু অপছন্দ করার মাঝেই সন্তুষ্ট থাকবে না, আপনার বিরোধিতা করবে। তখন কি করবেন? 

কিভাবে ধৈর্য ধরবেন।

আল কোরআন আপনাকে শিখাবে কিভাবে এমন পরিস্থিতির মোকাবেলা করবেন। এই বই আপনাকে বলবে ভালো মানুষ হতে এবং ভালো মানুষ হওয়ার এই ভ্রমণে আপনি পরিস্থিতি ও বিপদের সম্মুখীন হবেন। কঠিন পরিস্থিতি আপনাকে আরো ভালো উন্নত মানুষ হতে সাহায্য করবে। যখন ভালো মানুষ হয়ে উঠবেন তখন কেয়ামতের দিন আপনার এই ভালো গুণগুলো আপনাকে সাহায্য করবে। আপনার "জীবনের উদ্দেশ্য" পূরণ হবে সব শেষে যখন জান্নাতে প্রবেশ করবেন।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url