গীবতের ভয়াবহতা


গীবতের ভয়াবহতা
গীবত


গীবত কাকে বলে-

গীবত হলো কোন ব্যক্তির বাস্তব কোনো দোষ তার অগোচরে অন্যের কাছে বলা। 
যদি সে বাস্তবে কোনো দোষ করে থাকে, আর যদি না করে থাকে, তবে সেটা অপবাদ বলে বিবেচিত হবে। 

সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুম রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করলেন গীবত কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাল্টা প্রশ্ন করলে; তোমরা কি জানো গীবত কি ? সাহাবারা বললেন; আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। অতঃপর তিনি বললেন; তোমার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে অন্যের কাছে এমন কিছু বলা যা তার কাছে অপ্রীতিকর লাগে।


গীবতের ভয়াবহতা: 

গীবত এমন এক গুনাহ যে, হাদীছে একে যিনা থেকেও খারাপ বলা হয়েছে বহু হাদীছে বলা হয়েছে; গীবত করা যিনার থেকেও মারাত্মক।
কেননা গীবতের সম্পর্ক বান্দার হকের সাথে আর বান্দার হক তাওবা ছাড়া মাফ হয় না। আল্লাহ গীবিতকারিকে মৃত ভাইয়ের গোস্ত ভক্ষণকারি বলেছেন; বলেছেন ,

                          ولا يغتب بعضكم بعضا
আর তোমরা একে অপরের গীবত করো না।

একটু পর-ই আল্লাহ বলেন;
তোমাদের কেউ কি মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? অনন্তর তোমরা অপছন্দ করবে।
যে পিছন থেকে নিন্দা করে, সে তার ভাইয়ের গোস্ত খায় এখন ভায়ের গোস্ত খাওয়াই তো হারাম আবার বলা হয়েছে মৃত ভাইয়ের মাংস। মৃত করো মাংস খাওয়াও হারাম। তাহলে পিছন থেকে নিন্দা করা দুই গুণ পাপ। কত বড় পাপ।

আল্লাহ বাঁচান, কেউ যদি কোনো খারাপ কাজ করে ফেলে এরপর আল্লাহর দরবারে খাঁটি মনে তওবা করে ফেলে ঐ গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ তাআলা তওবার কত বড় দরজা খুলা রেখেছেন! এত বড় দরজা এত বড় দরজা যে, কোনো সীমা পরিসীমা নেই। মৃত্যু চলে আসা আগ পর্যন্ত এ দরজা খুলা।

কিন্তু যেটা বান্দার হকের বিষয়, সেটা বান্দা ক্ষমা না করার আগ পর্যন্ত আল্লাহ ক্ষমা করবেন না।
এজন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গীবতকে যিনা থেকেও নিন্দনীয় বলেছেন।
আল্লাহ তাআলা হেফাজত করুক!

কিন্তু আমাদের বৈঠকগুলো এসবে ভরা থাকে।
বর্ণনায় পাওয়া যায়- একবার সিদ্দীকে আকবার রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দেখা গেল; নিজের জিহ্বা বের করে মুরাচ্ছেন, প্রশ্ন করা হলো কি ব্যাপার!
বললেন- এই যে জিহ্বা জানা নেই কোথায় নিয়ে ছাড়বে! এজন্য আমি মুরাচ্ছি যাতে আমার নিয়ন্ত্রনে এসে যায়।
আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুক! আমিন


গীবত থেকে বাঁচার উপায়:

কিভাবে গীবত থেকে বাঁচবো; যথাসম্ভব চুপ থাকুন আখেরাতের কথা স্মরণ করুন। মানুষের সাথে কম মেলামেশা করুন। কেউ আপনার কাছে গীবত করতে চাইলে তাকে থামিয়ে দিয়ে বলবেন আমি গীবত করিনা। আড্ডাতে কম জড়ান।
আল্লাহ এত কঠিন কথা বলার পরও আপনি কিভাবে গীবত করবেন? যে গীবত করে সে মৃত ভায়ের মাংস খায়। কারো দোষ চোখে পড়লে তাকে সরাসরি বলবেন। পিছনে বলে দোষ বলে বেড়িয়ে সমালোচনা করে গীবত করে এক্সট্রা কোনো উপকার নেই। আল্লাহ গীবত থেকে বাঁচার তাওফিক দান করুক।

গীবতের কাফফারা

গীবত জিনার থেকেও মারাত্মক কারণ এটা বন্দর হক। আল্লাহর হক আল্লাহর কাছে মাফ চাইলেই মাফ করে দেন। কিন্তু বান্দার হক কোনো বান্দা যতক্ষণ না মাফ করে আল্লাও মাফ করবেন না। গীবত বান্দার হক নষ্ট করে। তাই কারো দ্বারা কারো গীবত হয়ে গেলে পরক্ষণে গীবতের কাফফারা দিতে হবে আর গীবতের কাফফারা হলো গীবতকারি যার নামে গীবত করেছে তার জন্য ও নিজের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করবে। 
Next Post
1 Comments
  • নাকিব মুহাম্মাদ
    নাকিব মুহাম্মাদ 21 July 2022 at 07:37

    আল্লাহ্ আমাদের দ্বীন মেনে চলার তাওফিক দান করুক! আমিন

Add Comment
comment url